- ///
- মানিকগঞ্জ




মানিকগঞ্জ, ঢাকা
মানিকগঞ্জ বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত, ঢাকা বিভাগের অন্তর্ভুক্ত একটি প্রাণবন্ত জেলা। এই জেলাটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ঐতিহাসিক স্থাপত্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা, কৃষি অর্থনীতি এবং অসাধারণ প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য বিখ্যাত। ব্রম্মপুত্র এবং পদ্মা নদীর অববাহিকায় অবস্থিত হওয়ায় এই জেলা দেশের বৈচিত্র্যময় কৃষি অর্থনীতির একটি আশীর্বাদ।
লোক সংগীত ও হাজারি গুড়ের জন্য খ্যাত মানিকগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত। পূর্বে মানিকগঞ্জ মহকুমা ফরিদপুর জেলার অংশ থাকলেও ১৮৫৬ সালে এটি ঢাকা জেলার অংশ এবং পরবর্তীতে ১৯৮৪ সালে একটি পূর্নাঙ্গ জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই জেলার উত্তরে টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ। দক্ষিণে রাজবাড়ি ও ফরিদপুর। পূর্বে ঢাকা এবং পশ্চিমে রাজবাড়ি ও পাবনা জেলা।
জেলাটি ঢাকা এবং দেশের অন্যান্য প্রধান শহরগুলোর সাথে বিভিন্ন মহাসড়ক, এবং নৌপথ দ্বারা সংযুক্ত। যাতায়াতের ক্ষেত্রে ঢাকা আরিচা মহাসড়ক এ জেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর একটি। বাস যোগে মানিকগঞ্জ থেকে শিবালয়, পাটুরিয়া, ঘিওরসহ অন্যান্য উপজেলায় যাতায়াত করা যায় সহজেই। আর খুব শিঘ্রই টঙ্গি-মানিকগঞ্জ-পাটুরিয়া ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা সম্পন্ন হলে এ জেলার সাথে অন্যান্য জেলার যোগাযোগ আরো সহজ হয়ে উঠবে।
এখানকার মাটি, বাতাস ও পরিবেশ শস্য ও ফসলাদি ফলানোর জন্য বেশ উপযুক্ত। উল্লেখযোগ্য ফসলের মধ্যে রয়েছে ধান, পাট, আখ, সরিষা, আলু, পেয়াজসহ নানান প্রকারের সবজি। এখানকার নদী, এবং খাল-বিলে প্রচুর মাছ আর বন-বনানীতে পাওয়া যায় নানান ঔষধি গাছ। এছাড়াও এখানে হরেক প্রজাতির পাখি, বানর, শেয়ালসহ বিভিন্ন প্রজাতির সরিসৃপ প্রানীর দেখা মেলে।
মানিকগঞ্জ জেলা ঐতিহাসিক স্থাপনার জন্য পরিচিত। মধ্যযুগীয় সময়ে, এই জেলা পাল ও সেন রাজবংশের প্রভাবে ছিল। এছাড়াও মুঘল শাসনামলে এই জেলা গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক এলাকা ছিল। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই জেলাটিকে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে ব্যবহার করতো। এই জেলায় প্রচুর প্রাচীন মন্দির, মসজিদ এবং বিভিন্ন স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়।
মানিকগঞ্জে অবস্থিত শিবালয়ে তেওতা জমিদার বাড়ি, সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি প্রাসাদ, সদর উপজেলায় বেতিলা-মিতরা জমিদার বাড়ি ও মত্ত মঠ, রফিক নগরে শহীদ রফিক জাদুঘর, হরিরামপুর ঝিটকায় পোদ্দার বাড়ী, ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক স্থাপনা। এছাড়াও আকর্ষণীয় টুরিস্ট স্পটের মধ্যে রয়েছে সাটুরিয়া উপজেলা কমপ্লেক্স মসজিদ, নাহার গার্ডেন পিকনিক স্পট, শহীদ রফিক লাইব্রেরি ও স্মৃতি জাদুঘর, পাটুরিয়া ফেরি ঘাট ইত্যাদি।
শান্তিপূর্ণ গ্রামীণ জীবন, ভাটি অঞ্চলের কালচার, এবং কিছু আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সমন্বয়, এই জেলাটিকে একটি অনন্য এবং আকর্ষণীয় অঞ্চলে পরিণত করেছে।ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, উন্নত যোগাযোগ এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ফলে এই এলাকায় আবাসিক ভবন এবং আধুনিক হাউজিং কমপ্লেক্সের চাহিদা বেড়েছে। জেলাটি প্রকৃতিপ্রেমী এবং ব্যস্ত নগর জীবন থেকে বিরতি নেবার জন্য একটি আদর্শ পরিবেশ অফার করে। নিরিবিলি এবং শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করার জন্য এই জেলা যে কাউকে আকর্ষণ করবে।
সিটি ইনসাইট
পরিচিত ল্যান্ডমার্ক সমূহ
Tewta Jomidar Bari
Betila Jomidar Bari
Baliati Jomidar Bari
Matta Moth